-
লোভ লালসার উর্ধ্বে উঠে নিজ প্রতিষ্ঠানকে গড়ে তুলেছেন জনবান্ধব ও বিপদগ্রস্থ মানুষের আশ্রয়স্থল। সৎ ও দায়িত্বশীল হিসেবে ২০১৮ইং সালে জামালপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে যোগদান করেন ফরিদা ইয়াছমিন। যোগদান করার পর থেকেই পরিবর্তনের লক্ষণ দেখা যায় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকান্ডে। স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে প্রতিনিয়ত কাজ করছেন তিনি। তার সততা ও কর্মদক্ষতায় পাল্টে গেছে উপজেলা পরিষদের প্রশাসনিক কার্যক্রম ও সার্বিক চিত্র। সরকারী বেসরকারী প্রতিটি দপ্তরের কর্মকান্ডে ফিরে এসেছে গতিশীলতা ও স্বচ্ছতা। কমেছে জনভোগান্তি আর বৃদ্ধি পেয়েছে জনসেবার মান। জামালপুর সদর উপজেলাকে একটি আধুনিক জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করছেন এই কর্মকর্তা। ৩০তম ব্যাচের এই কর্মকর্তার বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়। মাত্র ২ বছরে জামালপুর সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের মানুষ তাকে ভালোবেসেছেন কাজের বিনিময়ে। তিনি উপজেলা পরিষদে পঙ্গুদের জন্য দিয়েছেন কলিং বেল। নিচ তলা থেকে কলিং বেল বাজালেই চলে আসেন সাধারণ মানুষের পাশে। জানতে চান তার অসুবিধার কথা। গভীর রাতে ছুটে যান বাল্যবিবাহ বন্ধে। করোনাকালীন সময়ে প্রথম সারির এই কর্মকর্তা সরকারের সকল নির্দেশনা বাস্তবায়নে সর্বাত্বক চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফরিদা ইয়াছমিন বলেন, টেকসই উন্নয়নের মূলমন্ত্র হচ্ছে, কাউকে পিছনে রেখে নয়। সে লক্ষেই আমি জামালপুর সদরের পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। সরকারি এবং স্থানীয় অনুদানের সাহায্যে এদের জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণের ইচ্ছে থেকেই সরেজমিনে তাদের বাসস্থান পরিদর্শন করে তাদের চাহিদাগুলো জেনে নেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারগুলো ইউএনও কে কাছে পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয় এবং তাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে। এছাড়া সদরে হিজরা (তৃতীয় লিঙ্গ) দের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন এই কর্মকর্তা। তিনি কখনো ক্লান্ত হননি। অথচ একজন সরকারী কর্মকর্তা সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত তার নিজ দায়িত্ব পালন করেন। সম্পূর্ণ ভিন্ন এই কর্মকর্তা সরকারী দায়িত্ব পালনের জন্য ২৪ ঘন্টায় শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন।বর্তমান সরকারের ঘোষিত মুজিব বর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মান সরকারি খাস জমি উদ্ধারসহ বিভিন্ন কারযক্রম পরিচালনা করে আসছেন প্রতিনিয়ত।এই জনবান্ধধ কর্মকর্তাকে গত ১৫ ডিসেম্বর বিভাগীয় কমিশনার ময়মনসিংহ কর্তৃক শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে বদলী করা হয়েছে। তার এই বদলী মেনেনিতে পারেনি জামালপুর সদর উপজেলার মানুষ।উপজেলার সাধারন মানুষের মন্তব্য একজন সৎ কর্মকর্তা হিসেবে একজন ইউএনও যখন নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে জামারপুর সদর উপজেলাকে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ার জন্য প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে যাচ্ছে তখনই তাকে বদলী করা হলো, এটি খুবই দুঃখজনক। অশ্রুসিক্ত জলে আজ আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াছমিন। আমরা প্রাণ ভরে দোয়া করি তিনি যেখানেই থাকেন না কেন ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। শুধু তিনিই নন, তার স্বামী এ.এস.পি (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার), ইসলামপুর সার্কেল অফিসার সুমন মিয়া। তিনিও সরকারের সকল নির্দেশনা বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। এই দম্পত্তির ঘরে রয়েছে ৪ বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান। এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদা ইয়াছমিন বলেন, আমি সবসময় চেষ্টা করি সাধারণ মানুষের পাশে থেকে মানুষের সেবা করে যেতে। তাই আমি আমার দায়িত্বে কখনো অবহেলা করিনা। সেটা গভীর রাতই হোক কিংবা বন্ধের কোন দিন। আপনারা সকলেই আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন সঠিকভাবে আমার দায়িত্ব পালন করে যেতে পারি।