এক বছর ধরে ইজিবাইকচালকদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছিল একটি সংঘবদ্ধ চক্র। চাঁদাবাজরা পুলিশের নাম ভাঙ্গীয়ে ওই চাঁদার টাকা আদায় করে আসছিলেন। ইজিবাইক থেকে চাঁদা আদায়ের ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও দৈনিক তৃতীয় মাত্রায় ভিডিও নিউজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
অনেকেই চাঁদা আদায়ের সেই ভিডিও চিত্রটি জয়পুরহাট-২ (আক্কেলপুর-কালাই ও ক্ষেতলাল) আসনের সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের কাছে পাঠান। হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন থানা পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন। এর পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এস এম হাবিবুল হাসান ও আক্কেলপুর থানার ওসি যৌথ অভিযানে চাঁদা আদায়ের সাথে জরিত তিন জনকে আটক করে। পরে ইউএনও ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ওই তিনজনের কারাদণ্ড দেন।
আজ মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিন জন চাঁদাবাজকে হাতেনাতে আটক করে। পরে তাঁদের তিনজনকে ভ্রাম্যমান হাজির করে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইউএনও হাবিবুল হাসান তিনজনকে দশ দিন করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
দণ্ড প্রাপ্তরা হলেন, আক্কেলপুর পৌরশহরের বিহারপুর মহল্লার ফজলুর রহমানের ছেলে মাসুদ রানা (২৫), একই মহল্লার বিরেন চন্দ্রের ছেলে অনন্ত কুমার (২৮) ও উপজেলার গোপীনাথপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে সোহেল রানা (২২)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আক্কেলপুর কলেজ বাজারের অবস্থিত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেট সংলগ্ন এলাকায় ইজিবাইক স্ট্যান্ড থেকে মাসুদ রানা, সোহেল রানা ও অনন্ত কুমার নিয়মিত চাঁদা আদায় করছিলেন।
কলেজ বাজার এলাকার এক দোকান থেকে দৈনিক তৃতীয় মাত্রা আক্কেলপুর উপজেলা প্রতিনিধি ও সাপ্তাহিক অগ্রযাত্রা স্টাফ রিপোর্টার তাঁর মুঠোফোনে ইজিবাইক থেকে চাঁদা আদায়ের দৃশ্য ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেন। অনেকেই ভিডিওটি শেয়ার করেন।
জামালপুর শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মাহমুদ গ্রামের বাসিন্দা তৌফিক হাসান ইজিবাইকে চাঁদাবাজির ভিড়িও চিত্রটি হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনের নজরের আনেন।
হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন দ্রুত ব্যবস্থা নিতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ খাঁনকে নির্দেশ দেন। ওসির নেতৃত্বে থানা পুলিশ মঙ্গলবার বিকেল তিনটায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেট এলাকা থেকে তিন চাঁদাবাজকে হাতেনাতে আটক করে। তাঁরা পুলিশের কাঁছে চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকার করেছে।
অনন্ত কুমার নয় হাজার টাকা করে নেওয়া কথা স্বীকার করে বলেন, প্রতি রাতেই দুটি করে ইজিবাইক থানার ডিউটি করে। একারণে খরচা বাবদ ওই টাকা নেওয়া হয়। এটি ওসি স্যার অবগত আছেন।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ খাঁন বলেন, থানায় কোনো ইজিবাইক দিয়ে রাতের বেলায় ডিউটি করানো হয় না। যদিও কখনো ডিউটি করানো হয় তাহলে নিজের পকেটের টাকায় ভাড়া পরিশোধ করি। কাজেই ইজিবাইক থেকে চাঁদা আদায়য়ের বিষয়টি জানা নেই। পুলিশের নাম ভাঙিয়ে কেউ যদি টাকা নেন তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সাংসদ ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ইজিবাইক থেকে চাঁদা আদায়ের ভিডিও চিত্র আমার নজরের আসার পর ওসিকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দশ দিয়েছি। আমি জয়পুরহাট জেলাকে শতভাগ চাঁদাবাজি মুক্ত করতে চাই।