ঢাকা অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুর নামক এলাকায় পোশাক কারখানার ক্যামিকেল যুক্ত দূষিত পানি থেকে বাঁচতে এলাকাবাসীর আকুতিতে এগিয়ে আসেনি কেউ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও টনক নড়ছেনা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। কসিমউদ্দিন কেচুর কারসাজিতে পানি বন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শতশত মানুষ! মানববন্ধন করেও শেষ রক্ষা হয়নি হতভাগাদের!
প্রায় ৩ মাস যাবৎ নিশ্চিন্তপুরের অন্বেষাগলির এলাকায় কারখানার দূষিত পানিতে রাস্তা ঘাট,ঘর বাড়ি ডুবে একাকার, ফলে চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে ওই এলাকায় বসবাসকারী পোশাক শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার কর্মজীবী ও সাধারন খেটে খাওয়া মানুষ গুলোকে। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বয়ষ্ক থেকে শিশুরা! এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও কোনো উপকৃত ফলাফল আসেনি উক্ত এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে।
এলাকাবাসীর এমন দূর্ভোগে কেউ এগিয়ে না আসলেও মানবিকদিক বিবেচনা করে এগিয়ে আসেন সাবেক মেম্বার আব্দুল মালেক মন্ডল । দূষিত পানি নিষ্কাশনের জন্য এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে নিজ উদ্যোগে সরকারি সড়ক দিয়ে একটি ড্রেনেজ ব্যবস্থার প্রায় ৯০শতাংশ সমপন্ন করেন তিনি। কিন্তু প্রভাবশালী কসিমউদ্দিন ওরফে কেচু মিয়া নামক এক ব্যক্তির কারসাজিতে বন্ধ হয়ে যায় সেই কাজ । এতে স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্ভোগ আরো বেড়ে যায়।
ভুক্তভোগী ইয়াসিন মোল্লা বলেন, আমাদের এই এলাকায় প্রায় ১ হাজার পরিবারের বসবাস। দূষিত পানির জন্য আমরা যে কষ্ট পোহাচ্ছি তা ভাতের কষ্টের চেয়েও অনেক বেশি। আজ তিনটা মাস ধরে এই অবস্থা। পানিতে রাস্তা ডুবে গেছে। অনেকের ঘরের মধ্যেও পানি রয়েছে। শুধু পানি হলে তো কথা ছিলোনা পানির সাথে কারখানার কেমিক্যাল যুক্ত দুষিত বর্জও আসে। যা আনেক দুর্গন্ধ ছড়ায়। আমরা ঘরে বসে ভাত খেতে পারি না। এই পানির করণে নানা রোগ ব্যাধি হচ্ছে আমাদের। আমরা এই অবস্থা থেকে বাচঁতে চাই।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইয়ারপুর ইউনিয়ের ৬ নং ওয়ার্ডের অন্বেষাগলি এলকায় বসবাসরত প্রায় ১ পরিবার দূষিত পানি বন্দি হয়ে আছে। সে কারণে আব্দুল মালেক মন্ডল মালু নিজ উদ্যোগে ৩০০ ফুট দৈর্ঘ একটি ড্রেন নির্মান করে। এছাড়া ৪ টি সেচ মেশিন বসিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও করে। কিন্তু একটি মহল এই ড্রেন নির্মানে বাধা প্রদান করছে।
এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেন বলেন, আমি এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়ে একাধিকবার জায়গাটি পরিদর্শন করেছি এবং সবাইকে নিয়ে ত্রিমুখী একটি বৈঠক হয়। যারা বাধা প্রদান করছে তারা বলছে তাদের জায়গা। তাই জায়গাটি আমিন দিয়ে মেপে সরকারি রাস্তা বের করে সেদিক দিয়ে ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
গত ২৯ ডিসেম্বরে “শীতের দিনেও পানি বন্দি শতশত মানুষ”, শিরোনামে দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার অনলাইন সহ বেশ কিছু গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়, এরপরও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে তেমন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় এলাকাবাসি একত্রিত হয়ে সাবেক এক মেম্বারের নেতৃত্বে কাজ শুরু করে। সে কাজও বন্ধ করে দেয় কেচু মিয়া নামের সেই প্রভাবশালী ।