আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আত্তীকরণ ও অ্যাডহক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন সরকারিকৃত কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। একইসাথে সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকদের পদসৃজন ও অ্যাডহক নিয়োগের কাজ থেকে সরকারিকরণ বিরোধী, মামলাবাজ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের বাদ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। এসব দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মারকলিপিটি জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ সরকরি কলেজ শিক্ষক পরিষদের (বাসকশিপ) নেতারা। মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনারের হাতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর দেয়া স্মারকলিপিটি জমা দেন রংপুর বিভাগের শিক্ষকরা।
স্মারকলিপি জমা দিয়ে শিক্ষকরা বলেন, সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকদের পদসৃজন ও অ্যাডহক নিয়োগের কাজ থেকে সরকারিকরণ বিরোধী, প্রতিহিংসাপরায়ণ ও মামলাবাজ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছেন তারা। একইসাথে পরিদর্শন প্রতিবেদন অনুযায়ী দ্রুত সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক-কর্মচারীদের পদসৃজন ও অ্যাডহক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
শিক্ষক নেতারা আরও বলেন, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি উপজেলায় একটি করে স্কুল-কলেজ সরকারিকরণের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষণার পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত একটি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের পদসৃজন ও অ্যাডহক নিয়োগের কাজ সম্পন্ন হয়নি। ফলে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা সরকারিকরণের সুবিধা পাচ্ছেন না। ইতোমধ্যে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে ৩ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারী অবসরে গেছেন কোনো সরকারি সুযোগ সুবিধা ছাড়াই। প্রধানমন্ত্রীর নেয়া স্কুল-কলেজ সরকারিকরণ করার ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মামলা করে বাধা সৃষ্টি করা শিক্ষা ক্যাডারের কতিপয় চিহ্নিত কর্মকর্তা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা অধিদপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে আত্তীকরণ প্রক্রিয়া আটকে রেখেছে বলেও অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকরা আরও বলেন, এসব কর্মকর্তা বেশিরভাগ শিক্ষকদের নামের পাশে মন্তব্য কলামে অযাচিত নোট দিয়ে আত্তীকরণ ও অ্যাডহক নিয়োগে দেরি করছেন। তাই, সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষকদের পদসৃজন ও অ্যাডহক নিয়োগের কাজ থেকে সরকারিকরণ বিরোধী, মামলাবাজ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাদের বাদ দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
একইসাথে সদ্য সরকারিকৃত কলেজগুলোর পরিদর্শন রিপোর্টের ভিত্তিতে সব শিক্ষক-কর্মচারীদের আগামী ২১ ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মধ্যেই শিক্ষকদের অ্যাডহক নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন তারা। দাবি আদায়ে সংগঠনের পক্ষ থেকে আগামী ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের ৮ বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মধ্যে ৩০৫টি কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের পদসৃজন ও অ্যাডহক নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে একই দাবিতে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও জানান শিক্ষকরা।
এসময় বাসকশিপ সভাপতি কে এম দেলোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মৃধা, সিনিয়র সহ-সভাপতি শামসুল আলম, সহ-সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, মো. হেলাল উদ্দিন, মেহেদী হাসান, মনির হোসেন, মো. আশেকুর রহমান, মো. এনামুল হক, রংপুর বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক শাহ সাইফুল্লাহ মনিষী, সদস্য সচিব মো. ফারুক হোসেন , আব্দুল্লাহ আল মামুন, জি এম ফিরোজ রব্বানী, মো. নজরুল ইসলাম ও রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার বিভিন্ন কলেজ থেকে আসা শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।