১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালো রাতে ক্র্যাকডাউনের পর পাকিস্তানিরা তাদের গণহত্যাকে জায়েজ করার জন্য নানারকম তৎপরতা শুরু করে।
তারা দেখাতে চায় ভারতের মদদপুষ্ট দুষ্কৃতকারীরা ঢাকা তথা পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র বর্বর আক্রমণ পরিচালনা করছে।যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
পাকিস্তানি সেনা জান্তার এই মতবাদকে প্রতিষ্ঠা করতে কাজ করছিলেন তাদের এদেশীয় দোসররা।
এই প্রচারণার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন একজন বাঙালি যার নাম জহির রায়হান। যুদ্ধদিনে জহির রায়হানের এক অনন্য অবদান “স্টপ জেনোসাইড”।
“স্টপ জেনোসাইড” যুদ্ধকালীন সময়ে পূর্ব-পাকিস্তানে সংঘটিত গণহত্যার একটি প্রামাণ্য দলিল।
মাত্র ১৮ মিনিটের এই তথ্যচিত্রটিতে জহির রায়হান বাংলার বুকে পাকিস্তানের বর্বরতাকে তুলে ধরেছেন।
এই তথ্যচিত্রটিতে, ভারতে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ শরণার্থীদের চরম দুঃখ দুর্দশার কথা উঠে এসেছে। মানুষ কিভাবে প্রতিকূলতার মধ্যে, বিপদসংকুল পরিবেশে, প্রাণভয় সীমান্ত পাড়ি দিয়েছিল তার জীবন্ত বর্ণনা রয়েছে “স্টপ জেনোসাইডে”।
এই তথ্য চিত্রের মূল চিত্রধারণ সম্পন্ন হয় কলকাতায় স্থাপিত শরণার্থী ক্যাম্প গুলিতে, যা এক বিশেষ আবেদন তুলে ধরে বিবেকবান বিশ্ববাসীর কাছে।
যুদ্ধ দিনে কলকাতায় জহির রায়হান বিশেষ ভূমিকা পালন করলেও স্বাধীন বাংলাদেশ তার জন্য অপেক্ষা করছিল ভিষণ খারাপ খবর।
বিজয়ের ঊষালগ্নে জহির রায়হানের ভাই বিখ্যাত সাংবাদিক, সাহিত্যিক, শহীদুল্লাহ কায়সারকে তুলে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনী। ভাই কে খুঁজতে পাগলের মত এখানে সেখানে ঘুরে বেরিয়েছেন জহির রায়হান।
সবশেষে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি ভাইয়ের সন্ধানে একজনের সাথে গিয়েছিলেন মিরপুরে। মিরপুর তখনও এক বিপদসংকুল এলাকা।পরাজিত পাক সেনারা তাদের প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র মিরপুরে বসবাসরত বিহারীদের হাতে তুলে দিয়েছিল, যার মাধ্যমে পুরো মিরপুরকে তারা একটা দুর্গে পরিণত করেছিল। শত্রুদের এই দুর্গে ভাইয়ের সন্ধানে গিয়ে শহীদ হয়েছিলেন জহির রায়হান।