অনুসন্ধান মূলক জাতীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা অগ্রযাত্রা
অনুসন্ধান মূলক জাতীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা অগ্রযাত্রা
স্টাফ রিপোর্টার: গোয়াইনঘাটের জাফলংয়ে পাথরখেকো আলীম উদ্দিন, তার ভাই ও সাঙ্গপাঙ্গরা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের কারণে একই এলাকার কালিনগর গ্রামের আল আমীন তার পরিবার নিয়ে অসহায় অবস্থায় জীবন যাপন করছেন বলে সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ২০ জানুয়ারি রোজ বুধবার দুপুরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি লিখিত অভিযোগে বলেন, জাফলংয়ের কুখ্যাত পাথরখেকো চক্রের প্রধান আলীম উদ্দিন নানা অপকর্মে লিপ্ত। পাথরকোয়ারির বালু ও পাথর লুটপাট করতে করতে তারা এখন কোটিপতি। আলীমের বিরুদ্ধে ১৫/১৬টি মামলা রয়েছে। কয়েক মাস আগে আলীমের শ্যালক তাহির মিয়া এক কলেজ ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অবৈধ মেলামেশার ভিডিও তৈরি করেছে। ঐ ছাত্রী নারী নির্যাতন ও পর্ণগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করলে তাহির মিয়া এখনো কারাগারে বন্দী আর আলীম জামিনে আছে।
তিনি লিখিত অভিযোগে বলেন, চেনা পরিচয়ের সুবাদে আলীম সম্প্রতি আমার শ্যালিকা লিজা বেগমকে কুপ্রস্তাব দেয়। এলাকার সংবাদ কর্মী আকবর হোসেন, ইউসুফ আলী, ইসলাম উদ্দিন ও সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ মামলা করলে তাকে ৬ লাখ টাকা দেয়া হবে বলে প্রস্তাব দেয় আলীম উদ্দিন। লিজা তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে আমারই প্রতিবেশি রত্নার সাথে তারা মৌখিক চুক্তি করে। গণধর্ষণ মামলার আলামত তৈরির জন্য চুক্তি অনুযায়ী আলীমের ভাই শাহজাহান রত্নাকে এ মাসের শুরুর দিকে নিজের বাড়ি নিয়ে যায়। বিষয়টি জানতে পেরে লিজা ৯৯৯-এ ফোন করলে গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ রাত ৩টার দিকে রত্নাকে উদ্ধার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য আতাই মেম্বারের বাড়িতে রেখে যায়। এই কারণে আলীম শাহজাহান রেজওয়ান ক্ষুব্ধ হয়ে লিজাকে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। গত ১৩ জানুয়ারি তারা আমার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় আমার ৪ মাসের অন্তঃসত্তা স্ত্রী পারুলের পেটে আঘাত করলে তার রক্তক্ষরণ শুরু হয়। প্রতিবাদ করলে রুল দিয়ে আমাকেও আঘাত করে আহত করে। পারুলকে গোয়াইনঘাট হাসপাতালে ভর্তি করি। তার পেটের সন্তানের কি অবস্থা তা ডাক্তাররাও বলতে পারছেন না।
তিনি লিখিত অভিযোগে বলেন, ১৩ জানুয়ারি আমি গোয়াইনঘাট থানায় যে মামলা দায়ের করেছিলাম তার সাক্ষী ছিলেন প্রতিবেশি সানোয়ারা বেগম।
গত ১৪ জানুয়ারি আলীম উদ্দিন, শাহজাহান ও রেজওয়ান সানোয়ারার বাড়ি গিয়ে তাকে সাক্ষি না দিতে নির্দেশ দেয়। তিনি তা না মানলে তার বাড়িতেও তারা ভাঙচোর করে। এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুক লাইভে প্রচার করায় সংবাদ কর্মী আকবর হোসেনকে পাথরটিলা গ্রামের আরমান আলী চক্রান্ত করে ফাঁসিয়ে দেয়। পুলিশের উপর চাপ প্রয়োগ করে তারা আকবরকে আটক করায়। রাতে তারা, আকবর, ইউসুফ, ইসলাম উদ্দিন ও সাদ্দামের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। এ মামলায় নির্দোষ আকবর এই রিপোর্ট করা পর্যন্ত এখনো কারাগারে।
তিনি লিখিত অভিযোগে বলেন, গত দু’দিন আগে আলীম ও তার সহযোগীরা গোয়াইনঘাট থানায় দায়েরকৃত আমার মামলা তুলে না নেয়ায় জোর করে সাদা কাগজ টিপসই নিয়েছে। এ ব্যাপারে আমি থানায় জিডি করেছি।
এখন আলীম উদ্দিন চক্র আকবরের বড় ভাই আজগর আলী, চাচাতো ভাই সোহেল আহমদকে অস্ত্র ও নারী নির্যাতন মামলায় ফাঁসানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে জানতে পেরেছি। আমি আজ আলীম ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের হুমকিতে প্রাণ হাতে নিয়ে ঘুরছি। যখন তখন তারা হামলা চালাতে পারে। এ ব্যপারে প্রশাসনসহ সচেতন মানুষের সহযোগীতা চেয়েছেন আল আমীন।
সংবাদ সম্মেলনে আল আমীনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সোহেল আহমদ।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আজগর আলী, ইসলাম উদ্দিন, সাদ্দাম হোসেন, লিজা বেগম, আলমগীর হোসেন, শাহীন আহমদ প্রমুখ।
অনুসন্ধান মূলক জাতীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা অগ্রযাত্রা