স্টাফ রিপোর্টারঃ নবীন মাহমুদ
মৃদু মৃদু ঠান্ডা হাওয়ায় প্রচন্ড শীতের রাত্রি শেষে শিশির ভেজা ঘাসের ডগায় সূর্য মামার আলোক রশ্মির ঝলকানিতে শীতের আগামনী বার্তা নিয়ে কাপছে প্রকৃতি ঠিক এমন সময়ে এসেও পাওয়া যাচ্ছে না খেজুর রস।তবে সময়ের বিবর্তনে এ উপজেলা থেকে খেজুর গাছ এখন প্রায় বিলুপ্তি। বিগত দিনে শীতের মৌসুমে আসলে এ উপজেলার রস আহরণ কারী বাহু গাছিরা গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে রস আহরণের জন্যে অগনিত খেজুর গাছ চেছে পাইল করতেন। পাইল করার কয়েকদিন পরে পূনরায় পাইল দিয়ে গাছে হাড়ি পাতার ব্যবস্থা করতেন। গাছে হাড়ি উঠলেই উপজেলা ব্যাপী শুরু হতো পিঠা আর পায়েস খাওয়ার উৎসব।
খেজুরের রসের মনমুগ্ধকর ঘ্রাণে সকাল হলেই শিশু, কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধার মিলে গাছের তলায় ঝরো হতেন সেইসব দৃশ্য এখন তেমন একটা নেই বল্লেই চলে। এছাড়াও বহু পরিবার তাদের জীবিকা নির্বাহ করত খেজুর রস বিক্রির মাধ্যমে। এ উপজেলা থেকে খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে জীবন ও জীবিকার তাগিদে অন্য সব পেশায় চলে যাচ্ছে। খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ার একাধিক কারন আছে বলে মনেকরেন অভিঞ্জ মহল ও গাছীরা। প্রথমত ইট পোরানো পাজায় খেজুর গাছ দিয়ে ইট পোড়ানো সহ কম খরচে গৃহ নির্মাণের কাজে খেজুরগাছ ব্যবহৃত হওয়ায় কমে আসছে গাছের পরিমাণ। এছাড়াও আরও একটা অন্যতম কারণ হলো বৈদ্যুতিক লাইনের জন্য ডালপালা ছাটাইকরণের নামে খেজুর গাছের গোড়া বা অর্ধভাগ থেকে কর্তন।ইতিমধ্যেই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে এই গাছটির অস্তিত্বের উপর এছাড়াও প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগের কারণে গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় খেজুরের রস তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না। যার ফলে এখন আর দেখা মেলে না শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে রসে বোঝাই হাঁড়ি কাঁধে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ফেরী করার সেই মনরোম দৃশ্য। রাজাপুরের উপজেলার সদর ইউনিয়ন,শুক্তগড়,মঠবারিয়া,গালুয়াসহ অনেক জায়গায় প্রচুর গাছ দেখতে পাওয়া যেত। যা এখন বিলুপ্তির পথে প্রায় । কিছু কিছু গাছ কাটা হলেও কোন একসময় এগুলো ও বিলুপ্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে । তাই এখনই যথোপযুক্ত ব্যবস্থাগ্রহন আশু প্রয়োজন হয়ে পড়ছে। তা না হলে অতিশীঘ্রই খেজুরের রস বইয়ের পাতায় আর মানুষের মুখের গল্প হয়ে থাকবে।