ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহ জেলায় প্রায় ২০ লক্ষ মানুষের বসবাস স্থান। প্রায় প্রতিদিন জেলার ৬ টি উপজেলার কোন না কোন স্থানে খুন, সড়ক দুর্ঘটনা, আত্মহত্যায় নিহতের মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় ঝিনাইদহের মর্গে। ঝিনাইদহ-নারিকেল বাড়িয়া সড়কের পাঁশে অবস্থিত এই মর্গ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। ঝিনাইদহ জেলা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে এই মর্গ। তবে এই মর্গের বেহাল জীর্ণ দশা। ঝিনাইদহ মর্গ ঘরে দীর্ঘদিন ধরেই মোমবাতি জালিয়ে লাশ কাটাছেড়া করা হতো। উপরে ঘুরতো না কোন সিলিং ফ্যান। পানির ট্যাপেও ছিল সমস্যা। লাশকাটা ঘরের এই হাল দেখে বিচলিত হয়ে পড়েন ঝিনাইদহ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক ডাঃ জাহিদ আহমেদ ও তার স্ত্রী মীর্জা রুনী আইরিন মূর্চ্ছনা।সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন এই দম্পত্তি। সেখানে তিনি নিজের মিস্ত্রি দিয়ে একটা আইপিএস, একটি সিলিং ফ্যান, এগজাস্ট ফ্যান, ৫টি এলইডি লাইট ও স্যানিটারি ফিটিংস সামগ্রী লাগিয়ে দেন।এর পরেও অনেক সমস্যা এখানে নেই মৃতদেহ রাখার সুব্যবস্থা। কোন মৃতদেহ আসলে তাকে না নামিয়ে বহন কারী গাড়ীতেই রাখা হয়। কারন মাত্র একজন মাত্র ব্যক্তি এখনে নিয়োগ প্রাপ্ত। একটি মৃত দেহ একজনের পক্ষে বহন করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। তাই কোন মৃতদেহ আসলে তাকে আরও দুই জন ব্যক্তি ডেকে নিয়ে এসে সে মৃতদেহ মর্গ ঘরের মধ্যে নিয়ে যায়। যার কারনে মৃত দেহের সাথে আসা স্বজনের দের টাকার জন্য অনেক হয়রানী হতে হয়। মৃতদেহের আলামত সংগ্রামের জন্য একটি ফ্রিজ থাকলে তা দীর্ঘ দিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।
যার কারনে অনেক আলামত নষ্ট হয়ে যায়। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেক আধুনিক হলেও এই মর্গে পুরনা আমলের হাতুড়ী বাটাল দিয়ে মৃত দেহ ছেঁড়াকাটা হয়ে থাকে।গত সোমবার বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে সরেজমিনে ঝিনাইদহ মর্গে গিয়ে দেখা যায় বেহাল দশার জীর্ণ চিত্র। শৈলকূপা উপজেলার দুধসর ইউনিয়ন থেকে এক নারী মৃতদেহ এসেছে ভোর সকালে বেবি ট্যাস্কির মধ্যে পড়ে আছে মর্গ ঘরের দুয়ারে বসে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছে লাশকাটা ডোম। তার সাথে কথা বললে সে অনেক সমস্যার কথা জানায়।
সে জানায় মৃত দেহ একা বহন করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না যার কারনে তার শালা সহ অন্য একজন তাকে সহযোগিতা করে। তাদের খরচ সাধারন লাশের লোকের নিকট থেকে নেওয়া হয়। আমার সেই সাথে সে জানায় আমার এখানে বসার জন্য কোন রুম নেই। লাশের সাথে যারা আসে তাদের বসে থাকতে হয় একটি টিনের ছাপড়ার নিয়ে সেখানে বসার জন্য নেই কোন সুব্যবস্থা। মর্গের বাউন্ডারির মধ্যে ২/৩ টি পরিবার বসবাস করে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল তারা নাকি হাসপাতালে চাকুরী করে। খুবই দুঃখ জনক ঘটনা হোল এই মর্গের পুরান ঘরের মধ্যে শুকর পালন কর হয়।মৃতদেহের সাথে আসা শৈলকূপা দুধসর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহেব আলী জোয়াদ্দার বলেন যে এই মর্গের বেহাল দশার দিকে নজর নেই কেন। মর্গ একটি পবিত্র জাইগা এখানে শুকর পালন করা খুব দুঃখ জনক ঘটনা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মর্গের বেহাল দশার দিকে নজর দেওয়া উচিত বলে সে মনে করে। এখনে হিন্দু মুসলিম সকলের মৃত দেহ আসে।ঝিনাইদহ মর্গের বাহাল দশা ব্যপারে ঝিনাইদহ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগমের নিকট জানতে চাইলে সে মর্গের দায়িত্ব সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ হারুন অর রশিদের। এই প্রসঙ্গে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ হারুন অর রশিদের সাথে কথা বললে সে জানায় মর্গের দায়িত্ব ঝিনাইদহ জেলা সিভিল সার্জন অফিসের তবে আমার অফিস মর্গের বিদ্যুৎ বিল দিয়ে থাকে। তখন তত্ত্বাবধায়কের রুমে বসে মোবাইলে সিভিল সার্জন কে বিষয় নিয়ে কথা বললে সে বলে আমার জানা ছিল না যদি আমার অধীনে হয় তাহলে আমি ব্যবস্থা নেব। তবে আমি জানি মর্গের দায়িত্ব তত্ত্বাবধায়কের।