স্টাফ রিপোর্টার ইয়াছিন আলী খান সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি।
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে টানা ৩/৪ দিন ধরে অঝোরে বৃষ্টিপাত ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও লোকালয়সহ বিভিন্ন রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। তলিয়ে গেছে বিভিন্ন মাঠে পড়ে থাকা অবশিষ্ট পাকা বোরো ধান। একদিকে শ্রমিক সংকট, অপরদিকে আকস্মিক পাহাড়ি ঢলে শঙ্কা কাটছেনা বিপাকে পড়া হাওরপাড়ের ভূক্তভোগী কৃষকদের।
সুরমা, চেলা, মরা চেলা, চিলাই, চলতি, কালিউরি, ধূমখালি ও ছাগলচোরাসহ বিভিন্ন হাওর, খাল-বিলের পানি হু হু করে বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যার আশঙ্কা করছেন উপজেলাবাসী।
সীমান্তবর্তী বাংলাবাজার, লক্ষীপুর, বগুলা, নরসিংপুর, সুরমা, দোহালিয়া, পান্ডারগাঁও, মান্নারগাঁও ও দোয়ারা সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তা, মাঠঘাট, আউশ জমিতে পানি ঢুকছে। পানিবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে মাঠের অবশিষ্ট বোরো ফসল ও রবিশস্য উৎপাদন অনিশ্চিতের আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। মাঠ ও গোচারণ ভূমিতে পানি উঠায় গো-খাদ্য সংকটসহ মৎস্য খামারিরাও রয়েছেন চরম শঙ্কায়। কেননা গত বছর চার দফা বন্যায় ভেসে যায় শতাধিক খামারের কোটি কোটি টাকার মাছ ও মাছের পোনা ও রেনু। এ প্রতিবেদন লিখা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
জানতে চাইলে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দেবাংশু কুমার সিংহ বলেন, পানি বাড়লেও কোথাও ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনও পাওয়া যায়নি। তবে দূর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের প্রশাসনিক তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
গত কয়েকদিন থেকে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ দোয়ারা বাজার বন্যা দেখা দিয়েছে। নদ-নদী ও খালবিলের পানি বৃদ্ধি পেয়ে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে অনেক এলাকার রাস্তাঘাট ভেঙে এবং পানির নীচে তলিয়ে গেছে। সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার পাশাপাশি মানুষের ঘর-বাড়িসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবতি হতে দেখা গেছে। গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাত ও ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ দোয়ারা বাজারে, মৌলা/মাওলা এবং চেলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার সীমান্তবর্তী হকনগর, কলোনি, মোকাম ছরা,খাশিয়া বাড়ি, ইসলাম পুর,আননপারা, খুশিউরা,বাশতলাসহ ছাতক দোয়ারার বাজার উপজেলায় বাংলা বাজার ও বোগলা বাজার ইউনয়নের অধিকাংশ এলাকাসহ দোয়ারা বাজার ল উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে পড়ে।
বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দোয়ারা বাজার উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ দেওয়ান তানবীর বাবু বলেন, ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে গেছে। বেশকিছু রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। ইতিমধ্যে আমি বন্যা কবলিত কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং সবকটি ইউনিয়নের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষার চেষ্টা করছি। বন্যায় ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়টি তুলে ধরে প্রয়োজনীয় সহায়তার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি বলেন ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাত হলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।