নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দিনাজপুরের পার্বতীপুরের খোলাহাটি তে আফজাল হোসেন নামে এক ফার্নিচার ব্যবসায়ী ভূমিদস্যুদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন।
উক্ত ঘটনায় সরেজমিনে গিয়ে এমন তথ্য উঠে এসেছে। ভুক্তভোগী আফজাল হোসেন জানান,নিজ নামীয় ও তফসিল বর্ণিত সম্পত্তিতে আমি গাছ লাগিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছি। শফিকুল ইসলাম পিতা মৃত- আছাহাব আলি, মাহমুদুল ইসলাম, মাহফুজার আলি, মাহবুর রহমান সর্ব পিতা- শফিকুল ইসলাম ফকির,ফেলানী বেগম স্বামী – শফিকুল ইসলাম ফকির, সর্ব সাং- রঘুনাথপুর(ফকিরপাড়া।আশরাফুল ইসলাম পিতা-মুজিবুর রহমান, শারমিন আক্তার স্বামী- আশরাফুল ইসলাম,সাং- জমিরহাট(ডাঙ্গাপাড়া), আনারুল ইসলাম পিতা- তসলিম উদ্দিন রঘুনাথপুর(দোলাপাড়া) থানা- পার্বতীপুর-দিনাজপুর গণ দীর্ঘদিন যাবত উক্ত তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি জবর দখল করার পাঁয়তারা করে আসছে। এমতাবস্তায় গত ১৮ই নভেম্বর সকাল ৯ টার সময় উল্লেখিত বিবাদীগণ হাতে লাঠিসোটা নিয়ে তফসিল বর্ণিত সম্পত্তিতে গিয়ে ওই সম্পত্তিতে থাকা ১০ টি আম গাছ ও ১ টি কাঁঠাল গাছ কেটে বিনষ্ট করে। এতে করে আমার অনুমান প্রায় ৮০ হাজার টাকা আর্থিক ক্ষতি সাধন হয়।
উক্ত বিষয়টি দেখার পর আমি সহ আমার পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিবাদীকে বাধা নিষেধ করলে বিবাদী গণ উত্তেজিত হয়ে আমি সহ আমার পরিবারের লোকজনকে মারপিট করার জন্য উদ্যত হয়। এ সময় আমি আমার পরিবারের লোকজন প্রাণ ভয়ে দৌড়ে বাড়িতে প্রবেশ করি। উক্ত সময়ে বিবাদীরা আমাকে উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে। এই ঘটনায় সাক্ষী আছে।
এ বিষয়ে আমি গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ইং তারিখে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। সাধারণ ডায়েরি নং ৮১১। থানা পুলিশ বিষয়টির কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে যায়। কারণ,ওই ভূমিদস্যুরা জানে আমি অসহায়। আমার কেউ নেই। তাই তারা পেয়ে বসে।
যার উদাহরণ,আমি ব্যবসার সুবাদে খোলা হাটি বাজারে হক কাউন্টার সংলগ্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করায় আমার নিম্ন তফসিল বর্ণিত সম্পত্তিতে থাকা বসতবাড়িতে আমার মা এবং ১ জন ভাড়াটিয়া বসবাস করত। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আসামি আশরাফুল আলম পিতা- মুজিবুর রহমান সাং-ডাঙ্গাপাড়া মাহমুদুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান, মাহবুবুর রহমান,সর্ব পিতা- শফিকুল ইসলাম ফকির,শফিকুল ইসলাম ফকির পিতা- মৃত- আসহাব আলী,ছাতুল কবির পিতাঃ মোঃ আবুল কাশেম,মাসুদ রানা পিতা মৃত-টন্না মিয়া সর্ব সাং- রঘুনাথপুর (ফকিরপাড়া),শারমিন আক্তার স্বামী- আশরাফুল আলম সাং-জমিরহাট (ডাঙ্গাপাড়া),পার্বতীপুর, দিনাজপুরগণ আমার নিম্ন তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি দীর্ঘদিন যাবৎ জোরপূর্বক দখল করার উদ্দেশ্যে উল্লেখিত আসামিগণ আমার বাড়ির ভাড়াটিয়ার শহীত কারণে-অকারণে ঝগড়া বিবাদ করে।ফলে তাদের অত্যাচারে ভাড়াটিয়ারা গত ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে আমার বাড়ী হতে বের হয়ে যায়। ভাড়াটিয়া আমার বাড়ি হতে চলে যাবার পর আমার মা একাকী বাড়িতে বসবাস করায় আমি গত ১৮.১২.২০২০ ইং তারিখে দুপুরে খোলাহাটির বাসা হতে আমার বাসার মালামাল নিয়ে আসলে উপরোক্ত আসামিগণ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই উদ্দেশ্যে বেআইনি ভাবে দলবদ্ধ হয়ে দা,কুড়াল,লোহার রড,বাঁশের লাঠি ইত্যাদি দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আমার নিম্ন তফসিল বর্ণিত সম্পত্তিতে অনধিকার প্রবেশ করে তাদের বলে দাবি করে আমার খোলাহাটির বাসার মালামাল ঐ বাড়ীতে ঢুকাতে দিবেনা বলে জানায়। সে সময় আমি বাড়িতে না থাকায় আমার মা এর প্রতিবাদ করলে ওই ভূমিদস্যুগণ উক্ত সম্পত্তিতে বসবাস করা বাবদ আমার মায়ের নিকট ৩ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমার মা ভূমিদস্যুদের অন্যায্য দাবিকৃত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তারা আমার মায়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বাসার সীমানা প্রাচীর, বসতবাড়ীর ভিতরে থাকা বিভিন্ন আসবাবপত্র ও রান্না ঘর ভাংচুর করে প্রায় ৫৫ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে।শুধু ক্ষতি সাধন করে তারা ক্ষান্ত হয়নি। আমার সীমানা প্রাচীর ভেজ্ঞে সাড়ে ৬শতক জায়গাও দখল করেছে।ভাজ্ঞা অংশে টিনের ঘেরা দিয়ে রাখায় আমরা পুরো পরিবার অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছি। এসময় তাদের এসবের প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমার মা,মেয়ে ও বোন রক্তাক্ত ও জখমপ্রাপ্ত হন।এই ঘটনায়ও থানায় একটি এজাহার দায়ের করি।সেটিরও সঠিকভাবে কোন তদন্ত করা হচ্ছে না।
ভুক্তভোগী আফজাল আরও বলেন, প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করতে গত ২৬ নভেম্বর ২০২০ ইং তারিখে চলাচলের রাস্তা উন্মুক্তকরণের বিষয়ে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন করে ঐ ভূমিদস্যু চক্রটি।বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত পূর্বক মিমাংসা টেনে দিতে থানা পুলিশকে বলা হয়। সেটিরও কোন সুরাহা করেনি পার্বতীপুর মডেল থানা পুলিশ।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। খুব শিঘ্রই আদালতে এর চার্জশীট পাঠানো হবে।