হপ্তাহভর মশা মারবেন দুই সিটি মেয়র।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আসবে মশার প্রকোপ – এমনটাই জানালেন দক্ষিণের সিটি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। মেয়র বলেন, আমরা বছরব্যাপী সমনিত মশক নিধন কর্মসূচী শুরু করেছি যা ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর ছিল ফলে এই বছর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ছিল। কিন্তু ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করার কারণে কিউলেক্স মশার দিকে নজর দিতে না পারায় এই মশার ব্যপকতা বেড়েছে। তাছাড়া বিশেষজ্ঞদের, আমাদের কে দেয়া নিদর্শনা ভুল ছিল তারাই ডিসেম্বর পযন্ত ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাছাড়া মশা নিধনে কীটনাশক বদলেছেন বলেও জানান দক্ষিণের সিটি মেয়র তাপস। তিনি আরো জানান কিউলেক্স মশা বদ্ধ ময়লা পানিতে হয় এবং ইতিমধ্যেই আমরা খালের বর্জ্য অপসারণের কাজ করছি, খাল গুলো পরিস্কার করা গেলেই দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আসবে মশা।এক্ষেত্রে ঢাকাবাসী কে ধৈয্য ধরতে হবে। পাশাপাশি এবছর এপ্রিল থেকেই আমরা ডেঙ্গুর জন্য কাজ শুরু করব -গতকাল বুধবার (৩ রা মার্চ) দুপুরে একটার দিকে পান্থকুঞ্জ পরিদর্শনে গিয়ে এসটিএস উদ্বোধন কালে এসব বলেন তিনি।
এদিকে মশা মারতে ড্রোন ব্যবহার করবেন উত্তর সিটি কর্পোরেশন। যেসব এলাকায় মশক নিধন কর্মী বা ফগার মেশিন বহন কারী গাড়ি যেতে পারেনা ড্রোনের মাধ্যমে সেখানে ওষুধ ছিটানো হবে। উত্তর সিটি করপোরেশনে আওতাধীন এলাকার খাল ডোবা নালা ও জলাশয় মশার মূল উৎপত্তিস্থল তাই ড্রোনের ব্যাবহারে ওষুধ ছিটানো হবে এবং ৮ থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত ড্রোন ব্যাবহার করে ঔষধ ছিটিয়ে ফলাফল দেখা হবে বলে জানা যায়।
এদিকে মশার প্রকোপে অস্থির নগরবাসী। উল্লেখ্য যে, উত্তর থেকে দক্ষিণের জনসাধারণের সাথে কথোপোকথনে তারা সবাই মশার উপদ্রব নিয়ে প্রায় একই রকম কথা বলছেন; নগরবাসীর ভাষায়, আজকাল ভোগান্তিতে আরেকটা বিষয় যোগ হয়েছে, যার নাম মশা। দক্ষিণ শহররের বাসিন্দাদের ভাষায় শুধু মশা নয়, মশা মারতে যে আওয়াজ আর ঔষধের (মেশিন ফগার মেশিনের সাহায্যা ছিটানো ঔষধ ) ব্যবহার করা হচ্ছে এতে মশা ত মরেই না বরং এতে উৎসাহিত হয়ে রাস্তার মশারা সানন্দে বাসা বাড়িতে প্রবেশ করে। গেন্ডারিয়ার বাসিন্দা রাশিদা বেগম বলেন, এদের শব্দ পেলেই দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়া ছাড়া উপায় থাকেনা – কারণ মশা তো মরেই না, বরং ঘর বাড়ি ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায় মশাও বাড়ে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন পাবলিক গ্রুপেও সমান তালে চলছে মশার হাত থেকে বাচতে চাওয়া নিয়ে পোস্ট। এমন একটি পাবলিক গ্রুপে সাদিয়া শারমিন হৃদি লিখেছেন “মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গেলাম!! কয়েল, ব্যাট, এরোসল, ওডোমোস সব ব্যবহার করেও কিছুই লাভ হয়না, মশারীতে ঢুকে থাকতে হয়, বাসা নেটিং করা তবু লাখ লাখ মশা কোত্থেকে আসে বুঝিনা!
কেউ কোনো কার্যকর বুদ্ধি দিয়ে জীবন বাঁচান প্লিজ এমন একটা ফেবু পোস্টে, দক্ষিণের যাত্রাবাড়ী নারিন্দা, মালিবাগ পান্থপথ, হাতিরপুল লালমাটিয়া, ধানমন্ডি কাঁঠাল বাগান থেকে শুরু করে গুলশান, বনানী উত্তরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা সহ সব এলাকার বাসিন্দারা মশার উৎপাতে তারা অতিষ্ঠ, এমনটাই পোস্ট করেছেন।এবং কয়েল এ্যরোসোল কিছুই কাজ করেনা বলে মন্তব্য করেছেন তারা। এমন কি কেউ কেউ মশা মারা ব্যাট দিয়ে ব্যাটিং এ্যাকশনে থাকেন বলে- লিখেছেন।
মশা মারতে এলাকায় কি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে, তারা কমেন্টে জানান, যে মশা মারতে যে সব ঔষধ ছিটানো হচ্ছে এতে কোনো কাজ হচ্ছেনা কারণ মশার প্রকোপ কমছেনা তাছাড়া ভডভডি কাজ করেনা, মশা মারতে যা ব্যবহার হচ্ছে ইহাকে ভডভডি বলে…
এছাড়া মশা নিয়ে অতিষ্ঠ মানুষ – বলে নিজেও মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। আজ বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে মেয়ের ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সাথে রাজধানীর পান্থকুঞ্জে এসটিএস উদ্বোধন শেষে তাজুল ইসলাম সাংবাদিক দের বলেন মশার নিয়ে মানুষ অতিষ্ঠ এবং এ নিয়ে বিভিন্ন কথা হচ্ছে। আমি নিজেও জানি মশা বেড়েছে।
ছবি ; সংগ্রহীত।