ফাঁকা রাস্তায় চালকের বেপরোয়া উদাসীন খামখেয়ালী গতি এবং একই সাথে হেল্পারের যা ইচ্ছে তাই মনোভাবে প্রাণ যেত যাত্রী ও সি এন জি চালকের। (বিগত ৩রা নভেম্বর ২০০০ মঙ্গলবার সকাল ১০ঃ৩০ মিঃ) শাহবাগ মোড় পার হতেই আচমকা রজনীগন্ধা ঢাকা মেট্রো ব- ১৫৬৩০৯ বাসটি একটি সিএনজি ঢাকা মেট্রো- চ,১৬-৪১৮৮ কে, একদম ঘেষে ঘেষে কাত করে দিয়ে মাঝরাস্তা থেকে যাত্রী নেয়ার উছিলায় আগাচ্ছিল। যদিও রাস্তায় ছিলো একজন যাত্রী যা সামনের একটি বাস নিয়ে গেছে। এবং বার বার সাবধান হতে বললেও থামছিল না হেল্পার ও চালকের খেলা। রাস্তা ফাঁকা কিচ্ছু করার ছিল না এবং বার বার বলা হলেও ২ য় এবং ৩য় বারের মতো ধাক্কা দেয় সিন এন জি টকে।
অবশেষে বাটা সিগ্যনালে ট্যাফিক সার্জেন্ট দের একটি টিম কে বিষয় টি জানাতেই তারা বাসটিকে সিগ্যনাল দিয়ে থামাতে চেষ্টা করলে এক সেকেন্ড থেমেই আবার টান দেয় বাস রজনীগন্ধা। এমনকি একজন হলুদ সার্জেন্ট দৌড়ে গিয়ে হেল্পার টিকে ধরে ফেললেও দ্রুত টান দিলে, ওয়্যারলেসে তারা ম্যাসেজ দিয়ে সাইন্সল্যাবের মোড়ে বাসটি ধরতে সক্ষম হয় এবং দায়িত্বরত সার্জেন্ট সাইফুল চালকের লাইসেন্স এর ওপর মামলা দেন।
এই ঘটনাটির বিশ্লেষণ করলে আসলে চিত্র কি ?
১. *স্টপেজ নিদিষ্ট করা থাকলেও থেমে নেই যত্রতত্র যাত্রী তোলা নামানো। যা মামলাযোগ্য হলেও, অনেক ক্ষেত্রেই দেয়া হয় না, পরিনামে চলছেই।
**মাঝরাস্তা থেকে ওঠা যাত্রীদের জন্য নেই আইনী ব্যবস্থা, যা করা গেলে বাধ্যগত ভাবে স্টপেজে থাকবেন তারা।
২. পাল্লা দিয়ে যাত্রী তোলার অশুভ প্রতিযোগিতা এখনো বিদ্যমান।
৩. লাইসেন্স এর ওপর মামলায় টাকার অঙ্কটা মোটা, ফলে চালকের দোষে, মালিকের জরিমানা গুনতে হবেনা – যা একটি আশার কথা। এতে দোষ যার, দায় তার নিয়মে চললে এবং মামলা যথাযথ হলে চালকরা বাধ্য হবে ঠিকঠাক চালাতে,কমে আসতে পারে অঘটনের সংখ্যা।
৪. চালকের *হেল্পার* – অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। এই হেল্পার ও চালকের নিয়োগের বিষয় টার দায়ভার মালিকের – যা থেকে কৌশলে মালিক ছাড় পেয়ে যাচ্ছেন।
বাহন যার, পরিচালনার দায়িত্ব তার- এ বিষয় প্রাধান্য পাওয়া জরুরি। কারণ অসচেতনতার একটি বড় ধরনের অপরাধ যা দূরঘটনার নাম দিয়ে পার পাওয়ার কু-রীতি অবশ্যই বন্ধ করা উচিত। একটি মানব সৃষ্ট অঘটন শুধু মৃত্যুই বাড়ায় না, বেচে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ায়।
দক্ষিণ ঢাকার যান দুরঘটনার অন্যতম কারণ অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বেড়ে চলা রিকশা ও ব্যাটারি চালিত রিকশা ;
অঘটনের বাইরে নেই ট্রাফিক পুলিশ!
এদিকে রাস্তায় বেড়েছে অনিয়ন্ত্রিত রিকশা এবং ব্যাটারি চালিত রিকশা। কিন্তু সড়কে চললেও এরা আসেনি সড়ক যান নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশের আওতায়। ফলে চলন্ত বাস ট্রাক যানের সামনে হুটহাট চলে আসায় প্রতিনিয়ত ঘটছে দুরঘটনা অথচ করার নেই কিছুই। সিগ্যনাল অমান্য করা ছাড়াও উল্টো রাস্তায় এদের ভয়াবহ চলাচল। এরা জানে সড়ক আইনের আওতায় রিকশার কোনো জরিমানা নেই, নেই কোনো শক্ত বিধিনিষেধ। ঢাকা শহরে বিশেষ করে দক্ষিণ ঢাকা সিটিতে রিকশার এমন বেপোরোয়া গতি এবং উল্টো পথে চলাচলে শুধু সাধারণ পাব্লিক নন রাস্তায় অনিয়ন্ত্রিত যান আর অনিয়ম ঠেকাতে যারা কাজ করে যান তারাও রেহাই পান না। বিগত নভেম্বরেই উল্টো পথে প্রচন্ড গতিতে ছুটে আসা এমনি রিকশার আঘাতে ডিউটিরত অবস্থায় খোদ ভুক্তভোগী হয়েছেন সারজেন্ট সাইফুল ইসলাম। তিন চারমাস পেরুলেও আজও ঠিক হয়নি তার ডানহাতের আঘাত প্রাপ্ত কব্জি। কেমন আছেন তিনি জিজ্ঞেস করতেই বললেন প্রচন্ড ব্যাথা.. যেন প্রতিদিনের সঙ্গী। কোনো কোনো ডাক্তার বলেছেন অপারেশন করতে আবার কেউ কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না ঠিক হবে কিনা। প্রতিদিন এই ব্যাথা নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। জানিনা কি হবে ভবিষ্যত।