মোঃ তামজিদ হোসেন রুবেল, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরে এবার টমেটোর বাম্পার ফলন হলেও দাম কমে যাওয়ায় হতাশ কৃষকেরা। গত বছর এই সময়ের তুলনায় এবার টমেটোর দাম অনেক কম। আশানুরুপ দাম না পেয়ে হতাশ চাষীরা। এতে উৎপাদন খরচ উঠলেও তেমন লাভ হবে না বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। দাম না পাওয়ায় চাষীদের মুখে এখন হাসি নেই। এসব টমেটো সংরক্ষনের জন্য এ অঞ্চলে নেই কোন হিমাগার না থাকায় সংরক্ষনের অভাবে বাধ্য হয়েই কমদামে টমেটো বিক্র করছেন কৃষকরা। এ অঞ্চলে হিমাগার নির্মাণের দাবী জানান তারা।
জেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবছর টমেটো চাষের লক্ষমাত্রা ছিলো ৫১০ হেক্টর জমি চাষ হয়েছে ৫৫০ হেক্টর জমিতে। লাভজনক হওয়ায় টমেটো চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। উন্নতমানের বিজলী, মানিক রতন, সুবলা, লাভলী জাতের টমেটো চাষ করে ভালো ফলন পাচ্ছেন তারা। এখানকার টমেটো সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যা জেলাবাসীর চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ অন্যান্য জেলায়ও যাচ্ছে এখন। জেলায় প্রতি বছর ৪৫ কোটি টাকার টমেটো উৎপাদন হলেও হিমাগার না থাকায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন কৃষকরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখাযায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ, চরভুতা, কালিরচর গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে টমেটোর বাগান। সবুজে ছেয়ে গেছে মাঠ। গাছে গাছে টমেটোর ফুল আর থোকায় থোকায় ঝুলছে টমেটো। কাঁচা ও আধা পাকা টমেটোর মাঝে এখন পাকতেও শুরু করেছে এসব বাগানের টমেটো। কেউ বাগানের যত্ন নিচ্ছেন কেউবা রোগ বালাই প্রতিরোধে ছিটাচ্ছেন কীটনাশক আবার কেউ টমেটো বাজারজাত প্রক্রিয়ায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন।
কয়েকজন কৃষক জানান, গত কয়েক বছর ধরে এ অঞ্চলে টমেটোর ভালো ফলন হয়। কিন্তু আশানুরুপ দাম পাচ্ছেননা তারা। এক একর টমেটো চাষে খরচ হয় ৪০-৫০ হাজার টাকা। আয় হয় ৮০-৯০ হাজার টাকা। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা দরে। এসব টমেটো সংরক্ষনে কোন হিমাগার নেই। হিমাগার থাকলে কয়েক দিন টমেটো সংরক্ষন করে বিক্রি করলো আরো বেশী লাভবান হতো বলে জানান তারা।
লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. বেলাল হোসেন খান অগ্রযাত্রাকে জানান, টমেটোর বাম্পার ফলনে দিন দিন টমেটো চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষীদের। এবার জেলায় উৎপাদিত টমেটোর বাজার মুল্য ৪৫ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। তবে এখানে হিমাগার না থাকায় তারা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন স্বীকার করে এ কর্মকর্তা বলেন সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে হিমাগার নির্মাণ করা হলে এ জেলার সবজি উৎপাদন আরো অনেকটা বাড়বে।