রিপোর্ট : মুহাজির রহমান মিঠু ।
যখনই শুনি কারো রক্তের প্রয়োজন খুব করে চেষ্টা করি রক্তটা ম্যানেজ করে দেয়ার।
2008 সাল থেকে নিয়মিত রক্তদান করি। আমার প্রথম রক্তদানের স্মৃতি আজও আমাকে কষ্ট দেয় আবার আনন্দ দেয় সেদিন যথা সময়ে রক্ত দিতে পেরেছিলাম বলে।
এক দিকে করোনায় মৃত্যুর মিছিল অন্যদিকে রক্তের অভাবে মৃত্যুর প্রহর।
রক্ত নিয়ে কাজ করার কারণে খুব কাছ থেকে এই আহাজারি গুলো দেখতে হয় আমাদের।তবুও রক্তযোদ্ধা ভাই-বোনেরা থেমে নেই।
এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটে চলছেন নিজে রক্তদান করতে অথবা অন্য কোন রক্তদাতাকে সাথে নিয়ে। উদ্দ্যশ্যে একটাই সৃষ্টির সেবা…
অনেক সময় খুব অবাক হয়ে যাই সামান্য অজুহাতে অনেকের রক্তদানে অনিহা প্রকাশ করা দেখে। আবার অনেকেই হাজারো কাজ ফেলে ছুটে চলে একটা প্রাণ বাঁচাতে।
এই-তো গত পরশু দিনের গল্প একজন রক্তযোদ্ধা আরমান ভাই লকডাউনকে উপেক্ষা করে সেই সাভার থেকে কখনো রিক্সায় কখনো পায়ে হেটে ঢাকা মেডিকেলে রক্তদান করে হাসি মুখে ফিরে গেছেন।
আমি এমনও দেখেছি বয়স ১৮ হয়নি তবুও মা’কে বাঁচাতে একটি মেয়ে রক্তদান করছে।কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম তোমার তো ১৮ বছর হয়নি! সাথে সাথে মেয়ের বাবা বললো গত দুইদিন ধরে এক ব্যাগ রক্ত খুঁজতেছি কিন্তু কাউকেই পাচ্ছিনা।আবার রক্ত যে কিনবো সেই টাকাও নেই।পরে নিজের এই ছোট মেয়েটার রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে তাকেই রক্ত দিতে বললাম। সেদিন নিজেকে খুব অসহায় মনে হইছে। হাজারো মানুষ সবার শরীরেই রক্ত কিন্তু কেন জানি সেটা দান করতে আমরা উদাসীন। তবে যারা অন্যের বিপদের এই রকম উদাসীন থাকেন তারা এখনই সাবধান হন। প্রকৃতির বিচার খুবই খারাপ।তাই আসুন ভাই স্বেচ্ছায় রক্তদান করি।
আমি বিশ্বাস করি এই ভাল কাজের পুরস্কার সয়ং মহান সর্বশক্তিমান নিজ হাতে দিবেন।
আজ আমার ২১ তম রক্তদান ছিল।আমার এই রক্তদানকে সকল স্বেচ্ছাসেবী ভাইদের উৎসর্গ করলাম। প্রিয় স্বেচ্ছাসেবী ভাই আপনারা আছেন বলেই হাজারো অসহায়ের রোগীদের মুখে হাসি ফোটে।