ঢাকাশুক্রবার , ১৭ ডিসেম্বর ২০২১
২২শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ ৫ই জুন ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ সোমবার
  1. অন্যান্য
  2. অর্থনীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আলোচিত সংবাদ
  5. ক্রিকেট
  6. খেলাধুলা
  7. জাতীয়
  8. জীবনচিত্র
  9. ফুটবল
  10. বিনোদন
  11. বিশ্ব
  12. ভিডিও গ্যালারি
  13. রাজনীতি
  14. সারাদেশ
  15. সাহিত্য
আজকের সর্বশেষ সবখবর

অর্ধশত বছর গ্রামীণ হাটে ময়দার বরা বিক্রী করেই সংসার চালান আজিজ;বিয়েও দিয়েছেন তিন কন্যার

Agrajatra 24
ডিসেম্বর ১৭, ২০২১ ২:৩৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

এস.এম নুরনবী,স্টাফ রিপোর্টারঃ

পটুয়াখালী সদর উপজেলার প্রায় সকল ইউনিয়নসমূহেই বসে একাধিক সাপ্তাহিক হাট। আর এসকল হাটের প্রায় হাটসমূহেই এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়বে যিনি একবার হলেও হাট থেকে ক্রয়কৃত মিষ্টিজাতীয় বরা(ময়দা ও চিনির মিশ্রণে তৈরী একধরনের মিষ্টি আকৃতির সুস্বাদু ভাজা খাবার) খান নি৷ আর এই লোভনীয় খাবার তৈরী করে যিনি বিক্রী করেন তার নাম আবদুল আজিজ হাওলাদার।
পটুয়াখালী সদর উপজেলাব্যপী তার তৈরীকৃত এ খাবার আজিজ বরা নামে খ্যাত। চারিদিকে তার তৈরী এই বরার সুনাম ও পরিচিতি ব্যাপক।

মূলত গ্রাম্য সাপ্তাহিক হাটগুলোতে গিয়ে প্রায় ৪৫ বছর যাবত ময়দা দিয়ে তৈরী বরা বিক্রী করেই সংসার চালান আবদুল আজিজ হাওলাদার।
শুধুমাত্র এ বরা বিক্রীর আয়েই চলে তার সংসার। ৫ সন্তানের মধ্যে তিন কন্যার বিয়েও দিয়েছেন তার এই উপার্জিত আয়ের মাধ্যমে।

তিনি পটুয়াখালী সদর উপজেলার মরিচবুনিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড তাফালবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।

আজিজ হাওলাদার জানান, “খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেই বরা প্রস্তুতের প্রয়োজনীয় উপকরণ ও সরঞ্জাম নিয়ে ব্যবসায়ীদের যৌথভাবে ভাড়াকৃত ট্রলারে চড়ে প্রায় ৫-১০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেন নদীপথে। তারপরে গ্রাম্য সাপ্তাহিক হাটসমূহে গিয়ে উপস্থিত হন। তার এ অস্থায়ী বেচাকেনার জন্য থাকে পলিথিনের ছাউনি কিংবা প্লাষ্টিকের চটে নির্মিত একটি নির্দিষ্ট জায়গায় অস্থায়ী দোকান । যেখান থেকে ক্রেতাগণ এ সুস্বাদু খাবারটি ক্রয় করেন।
তার এমনও ক্রেতা রয়েছেন যারা দীর্ঘ ৩০ বছর সময়ব্যপী নিয়মিত প্রতি সপ্তাহে তার ক্রেতা।
মূলত পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত বোতলবুনিয়া ,হাজিখালী ,ছোটবিঘাই ইউনিয়নের কাজিরহাট, মরিচবুনিয়ার খাসের হাট, বড়বিঘাইয়ের খাটাশিয়ার সাপ্তাহিক হাটসমূহেই তার দোকানটি বেশী দেখা যায়।

আবদুল আজিজের এ খাবার নিয়ে ব্যপক মজার ঘটনাও আছে, প্রতিবেশী কারো নাম আজিজ থাকলে তাকেও লোকজন প্রায় ই “আজিজ বরা ” বলে সম্বোধন করেন। ফলে রেগেমেগে একাকার হন ওই ব্যক্তি।

আবদুল আজিজ সম্পর্কে এক ক্রেতা বলেন, ” ছোটবেলায় যখন ই বাবার হাত ধরে সাপ্তাহিক হাটে আসতাম তখনই বাবার কাছে আবদুল আজিজ সাহেবের তৈরী বরা খাওয়ার বায়না করতাম।
বরা খাওয়ার কথা বলায় বাবার দৌড়ানিও খেয়েছি বহুবার!

আবদুল আজিজের সাপ্তাহিক হাটে বরা বিক্রীর একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসলে সেখানেও তার প্রতি শুভাকাঙ্খীদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। কেউ কেউ কর্মক্ষেত্রে দূরে অবস্থান করায় তার তৈরী এ সুস্বাদু খাবার এখন খেতে পান না বলে আফসোস করেন!
অনেকে ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, “আজিজ কাকার বরা খুব মিস করি।”

ক্রেতাগণের এমন ভালোবাসায় মূগ্ধ আবদুল আজিজ হাওলাদার। ৭৫ বছর বয়সের মধ্যে ৪৫ টি বছরই তিনি অতিবাহিত করেছেন এ ব্যবসার মাধ্যমে। মূলত তিনি একজন সংগ্রামী মানুষ।

তিনি আনন্দঘন চিত্তে বলেন, “শুরুতে মাত্র ৫-১০ টাকা কেজি বিক্রী করে আসছিলাম, বর্তমানে সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রতি কেজী বিক্রী করি ১০০ টাকা দামে।আমার এই ব্যবসার মাধ্যমেই আমার সংসার চালিয়ে আসছি, আমার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। এই ব্যবসার মাধ্যমেই আমি ছেলেমেয়েদের বড় করেছি। মেয়েদের বিয়েও দিয়েছি। আমার সন্তানরাও আমাকে খুব ভালোবাসে। ইনশাল্লাহ যতদিন বেঁচে আছি ততদিন এই ব্যবসার মাধ্যমেই দিনযাপন করব।”